ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে ভিজিএফের মাত্র ৪৫০ টাকার জন্য হাতের আঙুল হারাতে হলো রিনা বেগমকে (৩৬)।
ইউনিয়ন পরিষদের দরজার ফাঁকে রিনার হাত আটকে যাওয়ার পর চৌকিদার দরজা বন্ধ করে দেন। এতে করে তার ডান হাতের একটি আঙুল কাটা পড়ে। বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিসাধীন আছেন রিনা।
বৃহস্পতিবার বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে এ ঘটনা ঘটে। রিনা ওই ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
রিনার স্বজনরা জানান, গত ছয় থেকে সাত মাস আগে রিনার সঙ্গে তার স্বামী ফজল মিয়ার ছাড়াছাড়ি হয়। এরপর থেকে রিনা তার স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে বসবাস করছেন। রিনার বাবা মারা যাওয়ার পর তার ভাই জসিম মিয়া সংসারের হাল ধরেন। রিনা ও তার মেয়ের ভরণপোষণও জসিমই দেন।
অসহায় ও দুস্থদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর অর্থ সহায়তার ৪৫০ টাকা আনতে বৃহস্পতিবার দুপুরে হরষপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যান রিনা। টাকা নেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়ানোর পর রিনাকে পেছন দিক থেকে একজন ধাক্কা দিলে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের দরজায় গিয়ে ধাক্কা খান।
এসময় রিনার ডান হাত দরজার ফাঁকে আটকে যায়। তখন দরজায় থাকা চৌকিদার মনে করেন রিনা জোর করে ভেতরে ঢুকে পড়ছেন। এসময় চৌকিদার রিনার হাত আটকে থাকা অবস্থাতেই দরজা বন্ধ করে দেন। এতে রিনার হাতের একটি আঙুল পুরোপুরি এবং আরেকটি আংশিক কাটা পড়ে। পরে রিনার স্বজনরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আহত রিনা সাংবাদিকদের বলেন, আমি চেয়ারম্যান অফিসের চৌকিদারকে অনেক মিনতি করে বলেছিলাম ভাই আমার হাত আটকে গেছে, দরজাটা খোলেন। কিন্তু চৌকিদার আমার কথা শোনেননি। পরে আমার কাটা আঙুল ঢিল মেরে ছুড়ে ফেলে দেন তিনি। এসময় চিৎকার করতে থাকি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হরষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সারওয়ার রহমান ভূইয়া জানান, ভিজিএফের টাকা বিতরণের সময় আমি অফিসে ছিলাম না। শুনেছি কার আগে কে টাকা নেবে, সেটা নিয়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। তখন চৌকিদার দরজা লাগাতে গেলে এই দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটে। দরজায় যে ওই নারীর হাত আটকে ছিল, সেটি চৌকিদার দেখেননি। ওই নারীর চিকিৎসার খরচ ইউনিয়ন পরিষদ বহন করবে। কেউ তো আর ইচ্ছা করে এমনটা করে নাই।
আমাদের ফেইসবুক Link : ট্রাস্ট নিউজ ২৪